বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১১

স্বাগতম ঈদ-উল-আযহা

মুসলিম সমাজে ঈদ-উল-আযহা একটি পবিত্র খুশির দিন। এই চান্দের মাসে সারা পৃথিবী থেকে মুসলমানগন আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভের জন্য আল্লাহর ঘর বায়তুল কাবায় যায় এবং সেখান থেকে মদিনায় হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর রওজা মোবারক জিয়ারত করেন। সব নিয়ম কানুন মেনে পরিপূর্ণ হজ্ব পালন করতে পারলে মুসলমান গন সদ্য ভুমিষ্ট নবজাতকের ন্যায় বেগুনাহ হয়ে যায়। সত্যি এ বড় নেয়ামত আল্লাহর পক্ষ থেকে তার অনুগত বান্দাদের জন্য। পবিত্র জিলহজ্জ মাসের এই হজ্বব্রত পালন শেষে হাজিরা নিজ নিজ পক্ষ থেকে মহান আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের আশায় কোরবানি করে থাকেন। শুধু হাজিগন ই নয় সারা দুনিয়ায় সে সকল মুসলমান মালদার রয়েছেন তাদের উপর ও কোরবানী করা ওয়াজিব। তাই এই দিন আল্লাহ তায়াকে সন্তষ্টি করার উদ্দেশ্যে প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমান কোরবানী করে থাকেন। আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবিব এর মাধ্যমে এর মাধ্যমে তার বান্দাদের এর ফজিলত সম্পর্ক্যে জানিয়ে দিয়েছেন। ঈদের দিন মানে খুশির দিন। এই দিন সকল মুসলমান ধনি গরিব ভেদে সকলেই যাতে আনন্দে কাটাতে পারে সেই জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে রসুল আমাদেরকে পথ বাতলাইয়া দিয়েছেন। সকল মুসলমান এর পক্ষে কোরবানী করা সম্ভব নয়। মুসলমান দের মধ্যে যারা গরিব তারা কোরবানী করতে পারে না। তাইত মহান আল্লাহুর নিয়ম। ধনীরা কোরবানী করবে আর তার তিন ভাগের একভাগ গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দিবে। যাতে করে এই আনন্দের দিন যাতে করে সকল মুসলমান আনন্দ করতে পারেন। আমরা যারা কোরবানী করব তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক পুরস্কার যদি সেটা আল্লাহকে সন্তষ্টি করার জন্য তার অনুমোদিত নিয়মে করা হয়।

কোরবানী দাতা পশুর মাধ্যমে  যে কোরবানী করেন তা কেবল পশু কোরবানীর মধ্যেই সিমাবদ্ধ নয়। একই সাথে সাথে তাকে নিজের ভিতর কোন পশুত্ব থাকলে তা ও কোরবানী করতে হবে। নিজের ভিতরের সকল খারাপিকে কোরবানী করতে হবে। কোরবানী শব্দের অর্থ ত্যাগ করা। কোরবানীর মাধ্যমে আমরা কি ত্যাগ করব? আমাদের ত্যাগ করতে হবে ঐ সমস্ত দোষ যা আমার নিজের মধ্যে রয়েছে যা আমার জন্য ক্ষতির কারন। ত্যাগ করতে হবে লোভ, লালসা, হিংসা বিদ্বেষ, পরনিন্দা করা, যে কোন উপায়ে হোক অপরের ক্ষতি করা, বড়াই, অহংকার ইত্যাদি যে বিষয়গুলো আমার মধ্যে থাকবে, আমার দ্বারা অপরের ক্ষতির চেয়ে বরং আমারই বেশী ক্ষতি হবে, তাই কোরবানীর মাধ্যমে এই সকল বিষয়গুলিতে কোরবানী বা ত্যাগ করে নিজেকে ইসলামের পরিপূর্ন অনুসারী করে তুলতে হবে। আর আমার কোরবানী করা পশুর গোস্ত তিন ভাগ করে সমান একভাগ গরিব মিসকিনদের, একভাগ আমার আত্বিয়স্বজনদেরকে এবং একভাগ আমার নিজ পরিবারের জন্য বন্টন করতে হবে। তবে কোরবানী দাতার পরিবার এমন বড় যদি হয় যে, কোরবানীর পশুর সকল গোস্ত একবারে রান্না করলে তার পরিবরের এক বেলার আহার হবে সেই ক্ষেত্রে পুরাটাই তার পরিবারের জন্য রাখার বিধান রয়েছে সেই বিষয়ে কোরবানীদাতা অবশ্যই কোন আলেম এর সাথে পরামর্শ করে সঠিক বিষয়টি জেনে নিবে। 

পশু কোরবানী করার পর রয়েছে সামাজিক দায়বদ্ধতা। এই দায়বদ্ধতার জন্য কোরবানী করার পর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, আমার কোরবানী করা পশুর উচ্ছিষ্ট যেমন রক্ত, ও অন্যান্য  আবর্জনা তে যেন কোন ভাবেই সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে। তাই কোরবানী করার পর পরিস্কার পরিছন্নতার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। শহরে ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে আবর্জনা ফেলতে হবে।

পরিশেষে ঈদের দিনটিতে সত্যিকারের খুশিতে মেতে উঠুক সমস্ত মুসলিম উম্মাহ,সকল মুসলমানদের মধ্যে জেগে উঠুক ভ্রাতুত্বের অটুট বন্ধন এই আশা সকল মুসলমান ভাইবোনদের কাছে রেখে এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন