শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১১

আল্লাহুর সৃষ্টি আর মানুষের জ্ঞান




সর্বময় ক্ষমতার একমাত্র অধিকারী মহান আল্লাহ পাক। সব কিছুই তিনি সৃষ্টি করেছেন। যত সৃষ্টি তিনি করেছেন তার মধ্যে মানুষকে শ্রেষ্ট হিসাবে সম্মান দিয়েছেন। তিনি মানুষের মধ্যে যে বিষয়টা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তা আর কাহার মধ্যে দেন নাই তাই মানুষ ই সেরা। তবে মানুষের সাথে জিন জাতীর অনেক মিল রয়েছে। যদিও বা জিন রা মানষের দৃষ্টি সিমার বাহিরে তবুও তারা মানুষের সমান নহে। আল্লাহ পাক মানুষকে যতগুলো গুণ দিয়েছেন তার মধ্যে ভাল মন্দ চিন্তা করা আর সেই চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে কিছু রুপান্তর করা অন্যতম। যেমন মানুষ সৃষ্টির সময়ে ছিল এক রকম, গুহাতে জীবন যাপন করত আর বর্তমানে সুরম্য অট্টলিকাতে জীবন যাপন করে। আজ মানুষ দুনিয়ার এক প্রান্তে বসে সারা দুনিয়ার খরব রাখছে। দুনিয়ার একপ্রান্তে বসে আজ কেউ কথা বললে তা সারা দুনিয়ার মানুষ শুনতে পাচ্ছে। এমনকি দুণিয়ার বাহিরেও মানুষ তার জ্ঞানের স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। মঙ্গল গ্রহে বা চাঁদে কি আছে তাও আজ এই মানুষ দুনিয়াতে বসে জানতে পারছে। মানুষ তার জ্ঞানের দ্বারা নিত্যনতুন বিষয় আবিস্কার করে চলেছেন যা প্রতিনিয়তই মানুষের প্রয়োজনে লাগছে। এই যে মানুষের জ্ঞান তা  নির্বাচিত জনের জন্য একমাত্র আল্লাহুর পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়েছে। এবং অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দান করা তার এই নেয়ামতকে ও কোন সীমার মধ্যে রেখেছেন। সেই সীমার বাহিরে মানুষের জ্ঞান কোন দিনও যেতে পারবে না। লক্ষ করুন মানুষ আজ দুনিয়া থেকে কোটি কোটি বছরের দুরের বিষয়গুলি নিয়ে গবেষনা করছে এবং সেটার সাথে মানুষকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তার সম্পর্কে ধারনাও দিচ্ছে অথচ যে পৃথিবীতে সে বসে এই জ্ঞানের চর্চা করছে সেই পৃথিবীটাকেই সম্পূর্ণরুপে আজও মানুষ চিনতে পরে নাই, বুঝতে পারে নাই। এ বিষয় সম্পর্কে পত্রিকা বা কোন মিডিয়ার খবরের মধ্যেমে আমরা জানতে পারি এরকম বহু স্থান এখন ও পৃথিবীতে রয়েছে যা মানুষের কাছে এখন রহস্যময় রয়েছে। মানুষ এর রহস্য ভেদ করতে পারছে না। তার মধ্যে বারমুডা ট্রায়াঙ্গাল অন্যতম। কত বিমান যে এখানে এসে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে তা আজ ও কোন মানুষের পক্ষে সন্ধান করা সম্ভব হয়ে উঠেনি তা অনেক মানুষের ই জানা আছে মিডিয়ার কল্যানে। এরকম আরেকটি স্থানের নাম মেক্সিকোর জোন অব সাইলেন্স। এটি একটি মরু এলাকা এখানে কেউ টেপ রেকর্ডার বাজাতে থাকলে হটাৎ তা বন্ধ হয়ে যায় এমনকি চলন্ত গাড়ীর ষ্টার্ট ও বন্ধ হয়ে যায়। কেন এমন হয় তা আজ মানুষের পক্ষে রহস্য ভেদ করা সম্ভব হয় নাই। তাছাড়া এখানের পোকা মাকড়, প্রানীগুলো ও পৃথিবীর অন্য যে কোন স্থানের সাথে সামঞ্জস্য নয়। মানুষ তার জ্ঞানের বলে গবেষনা চালিয়ে হয়ত একদিন এই রহস্যের ভেদ জানতে পারবে তারপর ও এই পৃথিবীতে দেখা যাবে কোথাও না কোথাও এমন কোন বিষয় থেকে যাবে যা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেহ বলতে পারবে না তার ভেদ কি। সব কিছুই যে আল্লাহ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এসব তারই নিদর্শন। এত গেল এই পৃথিবীর চার ভাগের একভাগ মাত্র স্থল এর কথা বাকি তিনভাগ পানির জগতের বিষয়টি রয়েছে। ওখানে না জানি আল্লাহ কত কি ই না জমা করে রেখেছেন।

বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০১১

বিজ্ঞাপনের সৌজন্যে নাটক না নাটকের সৌজন্যে বিজ্ঞাপন।


বাংলাদেশে অনেক ভাল ভাল নাটক নির্মাতা আছেন যারা সুন্দর সুন্দর নাটক আমাদেরকে উপহার দেন। একটা সময় ছিলো যখন নাটক দেখতে খুবই ভাল লাগত। মনে হয় নাটক দেখতে বসে কেউ বিরক্তি বোধ করত না। সবাই একটা স্বস্তিতে নাটক দেখতে পারত। তখন কোন কোন কোম্পানীর সৌজনে নাটক পরিবেশন করা হত। 50 মিনিট বা 1 ঘন্টার নাটকে তিন বারে সর্বোচ্চ 10 মিনিট বিজ্ঞাপন প্রচার করা হত। কিন্তু বর্তমানে আমার মনে হয় কোন দর্শক ই আর স্বস্তিতে নাটক দেখতে পায় না। কারন এখন নাটকের থেকে বেশী সময় বিজ্ঞাপন প্রচার হয়। 5 মিনিট নাটক তো কোন কোন ক্ষেত্রে 15 মিনিট বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। ফলে 5 মিনিট নাটক দেখার পর 15 মিনিট বিজ্ঞাপন দেখতে দেখতে আর পূর্বের প্রচার হওয়া নাটকের গল্প মনে করে রাখা সম্ভব হয় না। তাছাড়া বিজ্ঞাপন প্রচারের এই অত্যাচারে দর্শক এখন আর একটা চ্যানেলে বসে থাকে না। বিভিন্ন চ্যানেলে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। ফলে যে নাটকটি দেখতে বসা তা আর স্বস্তিতে দেখা সম্ভব হয় না। টেলিভিশনের সামনে বসলে মনে হয় এখন কি শুধু বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য নাটক নির্মান করা হয়। এক নাগাড়ে বিজ্ঞাপন দেখবে দর্শক মাঝে মাঝে একটু আধটু নাটক তাই তো বলা চলে এখন বিজ্ঞানের সৌজনে নাটক প্রচার নয় বরং নাটকের সৌজন্যে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়।  

রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০১১

অফুরন্ত ভান্ডার এর মালিক আল্লাহ।

দুনিয়াতে যত দিন একজনও মানুষ থাকবে যিনি পরম করুনাময় আল্লাহকে স্বরণ করবেন। ততদিন পর্যন্ত এই দুনিয়া আল্লাহ তায়ালা ধংস করবেন না। এটা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মুসলমান তথা আল্লাহর পছন্দের বান্দাদের জন্য করুনা বা নেয়ামত। আবার যে মানুষগুলো পরকালে আল্লাহুর বিচার ফায়সালার পর বেহেস্তবাসী হইবেন তাহাদের মধ্য একজন ব্যাক্তি এমন সম্পদের অধিকারী হবেন যে তার সম্পদ এই দুণিয়ার দশ গুণের কম হবে না। ঐ লোকদের মধ্য এমন লোক ও থাকিবে যাহারা দুনিয়া থেকে তিল পরিমান ইমান নিয়ে কবরবাসী হইবেন। পাঠক এবার ভাবুন দুনিয়াতে শুরু থেকে কত লোক এই পর্যন্ত আসছেন আর কত লোক শেষ পর্যন্ত আসবেন। এদের মধ্যে কমপক্ষে তিল পরিমান  ইমান নিয়ে কত জন কবরবাসী হইবেন। এককথায় তা গুণে বা বলে শেষ করা যাবে না। তাহলে এই এর প্রত্যেকজন কমপক্ষে দুনিয়ার দশ গুন সম্পদের মালিক হইবেন। এর বেশী কি পরিমান তা আল্লাহ ই ভাল জানেন। ভেবেছেন এই সম্পদ কোথায় আছে। কোথার থেকে আল্লাহ তায়ালা এই সম্পদ দিবেন। ভাবলে আপনি কি পাইবেন তা আমি জানিনা কিন্তু আমি জানি তা আল্লাহুর পক্ষে একেবারেই পানির মত সহজ। আল্লাহুর কাছে কোন কিছুর ঘাটতি নাই। তিনি যা ইচ্ছা করেন তাই হয়। তবু আমি আপনাদের জ্ঞাতার্থে এখানে কিছু পেশ করিতে চাই। আর তাহল মানুষের জ্ঞান আল্লাহর দান। আর মানুষকে আল্লাহ চিন্তা করার শক্তি দিয়েছেন। সেই মতে আমরা বিজ্ঞান বলে একটা বিষয় জানি। সেই বিজ্ঞানের কল্যানে আমরা জেনেছি যে আমরা একটি সৌর জগতের বাসিন্দা একটি সৃর্যকে কেন্দ্র করে আমরা আছি। পৃথিবী তার একটি গ্রহ মাত্র এরকম আরো অনেক গ্রহ আছে। আমরা যখন স্কুলের ছাত্র ছিলাম তখন পড়তাম 7 টি গ্রহ তারপর হলো 9 টি 11 টি আর উপগ্রহের তো হিসাব বাড়তেই আছে। একটি সৃর্যকে কেন্দ্র করে আল্লাহ কত যে সৃষ্টি করে রেখেছেন তা একমাত্র আল্লাহ পাকই ভাল বলতে পারবেন। তার উপর ইদানিং কোন কোন বিজ্ঞানী আবার বলছেন সৃর্য একটি নয় এরকম আরো অনেক সৃর্য আছে। তাহলে সেই সৃর্যের একটি পরিবার আছে। সেখানে কি আছে তা কে বলবে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া। এগুলো আসলে মানুষকে আল্লাহুর পক্ষ থেকে সামান্য ইংগিত মাত্র যে মানুষ তোমরা দেখ আমার ভান্ডারের বিশালত্ব কত যা তোমরা কোনদিনই হিসাব করে বলতে পারবে না। পাঠক বুঝুন তাহলে কেন আল্লাহ এমন সব পুরস্কার দেওয়ার ঘোষনা আল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহুর ভান্ডারে কোন কিছুর অভাব নেই। তিনি যা ইচ্ছা করেন তাই হয়। তিনি সব কিছুর মালিক তিনি পরম করুনাময় দয়ালু আল্লাহ। আমরা তার করুনা পাব সেই আশা করছি।  

বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০১১

স্বাগতম ঈদ-উল-আযহা

মুসলিম সমাজে ঈদ-উল-আযহা একটি পবিত্র খুশির দিন। এই চান্দের মাসে সারা পৃথিবী থেকে মুসলমানগন আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভের জন্য আল্লাহর ঘর বায়তুল কাবায় যায় এবং সেখান থেকে মদিনায় হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর রওজা মোবারক জিয়ারত করেন। সব নিয়ম কানুন মেনে পরিপূর্ণ হজ্ব পালন করতে পারলে মুসলমান গন সদ্য ভুমিষ্ট নবজাতকের ন্যায় বেগুনাহ হয়ে যায়। সত্যি এ বড় নেয়ামত আল্লাহর পক্ষ থেকে তার অনুগত বান্দাদের জন্য। পবিত্র জিলহজ্জ মাসের এই হজ্বব্রত পালন শেষে হাজিরা নিজ নিজ পক্ষ থেকে মহান আল্লাহর সন্তষ্টি লাভের আশায় কোরবানি করে থাকেন। শুধু হাজিগন ই নয় সারা দুনিয়ায় সে সকল মুসলমান মালদার রয়েছেন তাদের উপর ও কোরবানী করা ওয়াজিব। তাই এই দিন আল্লাহ তায়াকে সন্তষ্টি করার উদ্দেশ্যে প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমান কোরবানী করে থাকেন। আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবিব এর মাধ্যমে এর মাধ্যমে তার বান্দাদের এর ফজিলত সম্পর্ক্যে জানিয়ে দিয়েছেন। ঈদের দিন মানে খুশির দিন। এই দিন সকল মুসলমান ধনি গরিব ভেদে সকলেই যাতে আনন্দে কাটাতে পারে সেই জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে রসুল আমাদেরকে পথ বাতলাইয়া দিয়েছেন। সকল মুসলমান এর পক্ষে কোরবানী করা সম্ভব নয়। মুসলমান দের মধ্যে যারা গরিব তারা কোরবানী করতে পারে না। তাইত মহান আল্লাহুর নিয়ম। ধনীরা কোরবানী করবে আর তার তিন ভাগের একভাগ গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দিবে। যাতে করে এই আনন্দের দিন যাতে করে সকল মুসলমান আনন্দ করতে পারেন। আমরা যারা কোরবানী করব তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক পুরস্কার যদি সেটা আল্লাহকে সন্তষ্টি করার জন্য তার অনুমোদিত নিয়মে করা হয়।

কোরবানী দাতা পশুর মাধ্যমে  যে কোরবানী করেন তা কেবল পশু কোরবানীর মধ্যেই সিমাবদ্ধ নয়। একই সাথে সাথে তাকে নিজের ভিতর কোন পশুত্ব থাকলে তা ও কোরবানী করতে হবে। নিজের ভিতরের সকল খারাপিকে কোরবানী করতে হবে। কোরবানী শব্দের অর্থ ত্যাগ করা। কোরবানীর মাধ্যমে আমরা কি ত্যাগ করব? আমাদের ত্যাগ করতে হবে ঐ সমস্ত দোষ যা আমার নিজের মধ্যে রয়েছে যা আমার জন্য ক্ষতির কারন। ত্যাগ করতে হবে লোভ, লালসা, হিংসা বিদ্বেষ, পরনিন্দা করা, যে কোন উপায়ে হোক অপরের ক্ষতি করা, বড়াই, অহংকার ইত্যাদি যে বিষয়গুলো আমার মধ্যে থাকবে, আমার দ্বারা অপরের ক্ষতির চেয়ে বরং আমারই বেশী ক্ষতি হবে, তাই কোরবানীর মাধ্যমে এই সকল বিষয়গুলিতে কোরবানী বা ত্যাগ করে নিজেকে ইসলামের পরিপূর্ন অনুসারী করে তুলতে হবে। আর আমার কোরবানী করা পশুর গোস্ত তিন ভাগ করে সমান একভাগ গরিব মিসকিনদের, একভাগ আমার আত্বিয়স্বজনদেরকে এবং একভাগ আমার নিজ পরিবারের জন্য বন্টন করতে হবে। তবে কোরবানী দাতার পরিবার এমন বড় যদি হয় যে, কোরবানীর পশুর সকল গোস্ত একবারে রান্না করলে তার পরিবরের এক বেলার আহার হবে সেই ক্ষেত্রে পুরাটাই তার পরিবারের জন্য রাখার বিধান রয়েছে সেই বিষয়ে কোরবানীদাতা অবশ্যই কোন আলেম এর সাথে পরামর্শ করে সঠিক বিষয়টি জেনে নিবে। 

পশু কোরবানী করার পর রয়েছে সামাজিক দায়বদ্ধতা। এই দায়বদ্ধতার জন্য কোরবানী করার পর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, আমার কোরবানী করা পশুর উচ্ছিষ্ট যেমন রক্ত, ও অন্যান্য  আবর্জনা তে যেন কোন ভাবেই সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে। তাই কোরবানী করার পর পরিস্কার পরিছন্নতার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। শহরে ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে আবর্জনা ফেলতে হবে।

পরিশেষে ঈদের দিনটিতে সত্যিকারের খুশিতে মেতে উঠুক সমস্ত মুসলিম উম্মাহ,সকল মুসলমানদের মধ্যে জেগে উঠুক ভ্রাতুত্বের অটুট বন্ধন এই আশা সকল মুসলমান ভাইবোনদের কাছে রেখে এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।।